• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ষাট গম্বুজ বার্তা

তিস্তায় বাড়ছে পানি, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৪  

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে শেখ হাসিনা সেতু রক্ষা বাঁধের ব্লকে ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে তিস্তা সেতু থেকে এক কিলোমিটার দূরে রক্ষা বাঁধের ব্লকে ধসে যাচ্ছে। উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কয়েকটি গ্রামে পানিবন্দি হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

 

সোমবার (১ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িঘরে পানি উঠেছে। মানুষগুলো পানির মধ্যে জিনিসপত্র সরাচ্ছে ও নৌকায় চলাচল করছে। প্রায় দুইদিন ধরে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে কয়েকটি গ্রামের দেখা গেছে চরম দুভোগ। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের বাগেরহাট, ইচলির চর, শংকরদহ চর, কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বিনবিনা, নোহালীর চরের প্রায় ১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

পানিবন্দি পরিবারগুলো অনেক কষ্টে ঘুমাতে ও রান্না করে খেতে হচ্ছে। এসব পরিবারে মানুষরা গবাদি প্রাণী ও বাড়ির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। নিজেদের খাবার সমস্যা থাকলেও গবাদি পশুর খাবার নিয়েও বিপাকে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষের। তলিয়ে গেছে প্রায় দেড়শত হেক্টর জমির ফসল।

বেশি বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম জানান,পূর্ব বিনবিনার চর এলাকার বসবাস প্রায় আড়াই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এসব মানুষ কষ্টে জীবন যাপন করছেন।

পশ্চিম ইচলির বাসিন্দা মহসিন, রেয়াজুল, সাদ্দাম, নজরুল, বাগেরহাটের রোজিনা, শাহিনা জানান, গত রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িঘরে পানি ঢুক থাতে। পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আসবাবপত্র ও গরু, ছাগল, মুরগী ও জিনিসপত্র সরার আগেই তলিয় যায়।

খুব কষ্ট করে রাত কাটাতে হয়েছে।

 

তারা আরো জানান, চর এলাকায় তিস্তার ধারে আগে বেড়িবাঁধ ছিল। বেড়িবাঁধ থাকার কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও তারাতারি বাড়িতে পানি ঢুকতো না। চার পাঁচ বছর আগে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলেও তা পুনরায় নির্মাণ না করায় এখন পানি বৃদ্ধি পেলে বাড়িতে পানি উঠে।

এদিকে কিছু কিছু এলাকায় তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাছাড়া শেখ হাসিনা সেতু রক্ষা বাঁধের ব্লক ধসে যাওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, রবিবার রাতে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়। এখন পানি কমতে শুরু করছে। 

ভাঙন রোধের বিষয়ে তিনি জানান, পানি কমলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় চর এলাকায় কোন বেড়িবাঁধ নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে পানিবন্দি বাগেরহাট এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পানিবন্দি ৫০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার হিসেবে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ ও ১ লিটার তেল এর একটি করে প্যাকেট বিতরণ করেছেন।

অন্যদিকে সোমবার বিকালে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা (২৮.৭৫) ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দু-পয়েন্টের মাঝখানে গঙ্গাচড়ায় পানি পরিমাপ যন্ত্র না থাকায় এখানে পানির লেভেল জানা যায়নি। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের দাবি গঙ্গাচড়া এলাকায় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হওয়ায় এখানকার মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা